করোনার ভ্যাকসিন পরীক্ষায় শতভাগ সাফল্য দাবি চীনের |
করোনাভাইরাসের ভয়াল তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। মাত্র চার মাসে
বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের বিষাক্ত ছোবলে আক্রান্ত হয়েছে (শনিবার সকাল সোয়া
৮টা পর্যন্ত) ৪০ লাখ ১২ হাজার ৮৩৭ জন মানুষ। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৭৬
হাজার ২১৬ জনের।প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস
এতটাই ভয়ঙ্কর যে এরই মধ্যে বহু সংখ্যক বার নিজের খোলস পাল্টেছে
করোনাভাইরাস।
এবার এল সুখবর। করোনা মহামারী প্রতিরোধে মোক্ষম অস্ত্র টিকা আবিষ্কারের
পথে বহুদূর এগিয়ে গেলেন চীনের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি বানরের শরীরে নতুন
উদ্ভাবিত একটি টিকা (প্রতিষেধক) প্রয়োগ করে শতভাগ সাফল্য পেয়েছেন তারা।
পিকোভ্যাক নামে টিকাটি তৈরি করেছে বেইজিংভিত্তিক প্রতিষ্ঠ্যান
সিনোভ্যাক বায়োটেক। এতে প্রচলিত ভাইরাসপ্রতিরোধী প্রক্রিয়াই অনুসরণ করা
হয়েছে। কোনও প্রাণীর শরীরে এটি প্রয়োগ করলে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা ভাইরাস
ধ্বংস করতে সহায়তা করে।
গত ৬ মার্চ সায়েন্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে,
সম্প্রতি রিসাস ম্যাকাকিউস প্রজাতির একদল বানরের শরীরে নতুন ভ্যাকসিনটি
প্রয়োগ করেন চীনা গবেষকরা। এর তিন সপ্তাহ পরে বানরগুলোকে করোনাভাইরাসের
সংস্পর্শে নেওয়া হয়।এক সপ্তাহ পরে দেখা যায়, যেসব বানরের শরীরে বেশি মাত্রায় টিকা প্রয়োগ
করা হয়েছিল তাদের ফুসফুসে করোনার উপস্থিতি নেই, অর্থাৎ টিকাটি ভাইরাস
প্রতিরোধে সক্ষম হয়েছে। আর যেসব বানরকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি তারা
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং তাদের শরীরে নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা
দিয়েছে। গত এপ্রিলের মাঝামাঝি মানবদেহেও পিকোভ্যাকের ট্রায়াল শুরু হয়েছে।
এদিকে, করোনা মোকাবিলায় পিকোভ্যাকই একমাত্র ভরসা নয়। একই প্রক্রিয়া
অনুসরণ করে প্রায় একই ধরনের আরেকটি টিকা তৈরি করেছে চীনের সেনাবাহিনী।
ইতোমধ্যেই হিউম্যান ট্রায়ালের দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করেছে এটি।
তবে টিকা তৈরিতে একটি সমস্যার মুখে পড়তে পারেন চীনা গবেষকরা। দেশটিতে
ইতোমধ্যেই করোনার সংক্রমণ অনেক কমে এসেছে, বর্তমানে মাত্র কয়েকশ’ রোগী
রয়েছেন সেখানে। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই মানবদেহে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের
জন্য স্বেচ্ছাসেবক খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে তাদের জন্য। ২০০৩ সালে সার্স
(সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) ভাইরাসের টিকা তৈরি বন্ধ হয়ে
গিয়েছিল এই কারণেই।
No comments:
Post a Comment