লকডাউন শিথিলে বেপরোয়া নগরবাসী |
পাড়া-মহল্লায় খুলছে দোকানপাট। বাড়ছে রাস্তায়
মানুষের উপস্থিতি। সড়কে ব্যস্ততা যানবাহনের। ব্যাংকের সামনে গ্রাহকের দীর্ঘ
সারি লক্ষ করা গেছে বিভিন্ন জায়গায়। ভিআইপি সড়কসহ পুরো শহরেই রিকশার
রাজত্ব।
এছাড়া ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যাও প্রতিদিন বাড়ছে। কোথাও কোথাও দেখা গেছে ট্রাফিক জ্যাম। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই। এরই মধ্যে
জোহরের ওয়াক্ত থেকে মসজিদে নামাজ পড়ার অনুমতি মেলায় রাজধানীর বিভিন্ন
এলাকার মসজিদগুলোতে দেখা গেছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুসল্লি। তবে এখন পর্যন্ত
শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই নামাজ আদায় করছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট
ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, যতই দিন যাচ্ছে, রাজধানীর রাস্তায় যানবাহনের পরিমাণ
ততই বেড়ে চলেছে। এর মূল কারণ এক্ষেত্রে প্রশাসনের কড়াকড়ি অনেকটাই শিথিল হয়ে
এসেছে। যেসব জায়গায় আগে থেকে তল্লাশি করা হতো, সেখানে কোনো তল্লাশি নেই।রাজধানীতে
প্রবেশ ও বের হওয়ার অন্যতম পথ উত্তরার আবদুল্লাহপুর। দেশের উত্তর ও
দক্ষিণবঙ্গের লোকজন এ পথ দিয়েই রাজধানীতে ঢোকে। দুই দিন আগেও আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকরী বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত এখানে মনিটরিং করতেন। তাদের তল্লাশির মুখে
পড়তে হতো লোকজনকে। কিন্তু সেই চিত্র এখন বদলে গেছে।
সড়কে গণপরিবহন
নেই, কিন্তু অন্যান্য যানবাহনের সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে গেছে। বেড়েছে
সিএনজি-অটোরিকশার চলাচল। পাশাপাশি গণপরিবহন না থাকার সুযোগে মূল সড়ক দখল
করে নিয়েছে রিকশা।
অন্যদিকে
উত্তরা এলাকার শপিংমলগুলো না খুললেও ছোটোখাটো দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে।
অলিগলি ও পাড়া-মহল্লার দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। বেড়েছে মানুষের যাতায়াত।পুলিশ ও
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, নগরীর খিলগাঁও, মৌচাক, মগবাজার, নিউমার্কেট,
দৈনিক বাংলা, শাহবাগ, মিটফোর্ড, কাওরান বাজার, পান্থপথ, রামপুরা, বাড্ডাসহ
বিভিন্ন এলাকার চিত্র একই ধরনের।
এসব এলাকায়
স্টেশনারি, হার্ডওয়্যার, কাপড়ের দোকান, ইলেকট্রনিকসের দোকানসহ বিভিন্ন
দোকানে বেচাবিক্রি চলছে। এসব দোকানপাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো
তোয়াক্কাই করছে না ক্রেতা বা বিক্রেতা কেউই।
করোনা
ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে পরস্পরের মধ্যে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা
হলেও কোনো দোকানি তা মানছেন না, যার কারণে ক্রমেই ঝুঁকি বাড়ছে। তবে অধিকাংশ
দোকানদারের দাবি, তারা পেটের দায়েই দোকান খুলেছেন। অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে
নিতেই তাদের এমন সিদ্ধান্ত।
পুরান ঢাকার
বিভিন্ন অলিতে-গলিতে দেখা গেছে বেশির ভাগ দোকানই ধীরে ধীরে খুলছে।
রাস্তাঘাটেও ভিড় রয়েছে। কেউই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না।জানতে চাইলে
নুহা ইলেকট্রনিকসের মালিক আরাফাত হোসেন বলেন, ‘আর কত দিন বাসায় বসে থাকব।
প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকার বেশি ভাড়া। দোকান না চালালেও এই ভাড়া দিতে হবে।
পাশাপাশি নিজের বাড়তি খরচ। আর কেউ তো আমাদের সহযোগিতা করছে না। তাই দোকান
খুলতে বাধ্য হয়েছি।’
No comments:
Post a Comment