সালোয়ার-গেঞ্জি নিয়ে নোটিশ, তোপের মুখে ঢাবি ছাত্রী হল - Dot Tv News | Latest Bangladeshi News | Breaking News | Bangla Online News | আজকের সর্বশেষ খবর

সর্বশেষ

Home Top Ad

Post Top Ad


Friday, August 25, 2017

সালোয়ার-গেঞ্জি নিয়ে নোটিশ, তোপের মুখে ঢাবি ছাত্রী হল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে মেয়েদের সালোয়ারের ওপর গেঞ্জি পড়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নোটিশ দেয়ার পর সমালোচনার মুখে তা পরিবর্তন করেছে কর্তৃপক্ষ।
আগের নোটিশ সরিয়ে বৃহস্পতিবার হল কর্তৃপক্ষ এক নতুন নোটিশ দিয়েছে, যাতে ছাত্রীদের কক্ষ, বারান্দা, শৌচাগার ও ব্যক্তিগত এলাকা বাদে বাকি সব জায়গায় 'যথাযথ পোশাক' পরিধানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে বুধবার দেয়া প্রথম নোটিশে হলের ভেতর ছাত্রীদের 'সালোয়ারের ওপর গেঞ্জি' পরাকে 'অশালীন পোশাক' আখ্যায়িত করে তা পরিধানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
নিষেধাজ্ঞা না মানলে শৃঙ্খলা ভাঙার অভিযোগ এনে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও ওই নোটিশে জানায় কর্তৃপক্ষ।
নোটিশ দেয়ার পর পর বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুমুলভাবে সমালোচিত হয়। ছাত্রীরা কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তকে 'ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ' বলে মন্তব্য করেন।
কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে হলের এক ছাত্রী বলেন, সালোয়ার ও গেঞ্জি কী করে অশালীন পোশাক হতে পারে সেটি একটি বড় প্রশ্ন। এ সিদ্ধান্ত মুক্ত চিন্তা, জ্ঞান ও প্রগতির পথে বড় বাধা।
হলের আবাসিক এই ছাত্রী বলেন, আমি কীভাবে চলাফেরা করব, ঘুমাব তা আমাকে কেউ বেঁধে দিতে পারে না। হলে তো আরও অনেক সমস্যা আছে, সে দিকে তো কর্তৃপক্ষের নজর নেই, সব দুশ্চিন্তা পোশাক নিয়ে।নোটিশের ছবি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় উঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের অনেকেই ফেসবুকে পোস্টে কর্তৃপক্ষের দেয়া নোটিশের নিন্দা জানায়।
শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপ 'অপরাজেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়' এ তন্ময় কুমার হিরা নামের এক সদস্য লিখেন, ধর্ষণের দায় শুধুই নারীর, তার পোশাকের- এই বক্তব্যটি আবার দিতে চাইলেন বিশ্বদ্যিালয়ের হল কর্তৃপক্ষ। পোশাকে শালীনতা বজায় রাখার কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয় বলতে চাইল, শরীরের ওপর কাপড় চাপাও, নারী......হ্যাঁ? জন্মই তোমার আজন্ম পাপ।
এক পোস্টে ছাত্রী হলের অন্যান্য সমস্যা তুলে ধরে ওই নোটিশের সমালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মেহরুন নাহার মেঘলা।
তিনি লেখেন, ফাইনালি! এটা দেখাই বাকি ছিল! মেয়েরা ঠিকমতো খেতে পায় কিনা- সে খোঁজ কয়বার নেয়া হয় জানি না। মেয়েদের ফ্লোরে হুটহাট নোটিশ ছাড়া সমস্ত ছেলে/পুরুষ কর্মচারীরা চলাচল করে। দিব্যি হেঁটে চলে যায় মেয়েদের রুমের সামনে দিয়ে।
রুমে নেটওয়ার্ক না থাকায় মেয়েরা বাইরে কথা বলতে আসে। অবলীলায় সেদিক দিয়ে তাদের চলাচলের পথ করা হয়েছে। হল মেয়েদের, থাকবে মেয়েরা, সেখানে ঘোমটা দেবার কারণ তো দেখি না। একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মইন কাদির ?'অপরাজেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়' গ্রুপে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছেন, ছেলে মেয়েদের প্রত্যেকেরই যা ইচ্ছা তাই পোশাক পরার অধিকার আছে। এটা সম্পূর্ণভাবে যার যার ব্যক্তিগত ইচ্ছা অনিচ্ছা এবং অভিরুচির ব্যাপার। এটা নিয়ে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়ার নূ্যনতম অধিকার কারোর নেই।
এসব সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে হল কর্তৃপক্ষ নোটিশে পরিবর্তন আনলেও সালোয়ার ও গেঞ্জিকে 'অশালীন পোশাক' আখ্যায়িত করে কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি বলে দাবি করেন হল প্রভোস্ট সাবিতা রেজওয়ানা চৌধুরী।
তিনি বলেন, নোটিশে সে রকম কিছু লেখা নেই, এটি ছাত্রী হলের অভ্যন্তরীণ বিষয়, তাই কথা বলতে চাচ্ছি না। হলে গিয়ে নোটিশ পড়ে দেখতে পারেন।
তবে হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক মনিকা চক্রবর্তী বলেন, হলে শালীনতা বজায় রাখা আমাদের উদ্দেশ্য। হলের মেয়েরা দৃষ্টিকটূ পোশাক পড়ুক, তা আমরা চাইতে পারি না।
অনেক সময় মেয়েরা এত ক্যাজুয়ালি ঘোরাফেরা করে যে খুবই দৃষ্টিকটু। হলের অফিসে পুরুষ স্টাফ ও অভিভাবকরা থাকেন, এক্ষেত্রে নারীর নিজের কাছে অসম্মানজনক পোশাক না পড়াই শ্রেয়।  

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Pages