জাতিসংঘের এবারের সাধারণ অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যু জোরালোভাবে তুলে ধরবে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নিপীড়নের বিষয়টি তুলে ধরে এই সমস্যার সমাধানে বিশ্ববাসীর সহযোগিতা কামনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বানও জানাবেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন এসব তথ্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের অধিবেশনে বাংলাদেশের যোগদানের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রী। এ সময় পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সংস্থাটির সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনের উদ্বোধন হয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই অধিবেশন চলবে। ১৯ সেপ্টেম্বর সাধারণ বিতর্ক শুরু হবে।
সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক দমন-নিপীড়ন চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। সেখানে গণহত্যা চলছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে, যদিও মিয়ানমার তা অস্বীকার করে আসছে। নির্যাতনের মুখে টিকতে না পেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের আশ্রয় দিচ্ছে। তবে মিয়ানমারের এই নাগরিকদের ফেরত নিতে দেশটির ওপর চাপ অব্যাহত রেখে বাংলাদেশ।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগেও চার লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। অসহায় রোহিঙ্গাদের মানবিক দিক বিবেচনা করে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশ আজ সংকটের মুখোমুখি।
মন্ত্রী বলেন, এবারের অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যুটি জোরালোভাবে তুলে ধরবে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার যে নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে তা বন্ধের দাবি জানানো হবে। পাশাপাশি তাদের নাগরিককে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার দাবিও তোলা হবে জোরালোভাবে। আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালাবো।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এবারো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় বক্তৃতা করবেন। এবারের বক্তৃতায় শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটের কারণ এবং এর সমাধানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন। কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানাবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী একাত্তরে বাংলাদেশে যে গণহত্যা হয়েছে এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি জানাবেন।
আবু হাসান মাহমুদ আলী জানান, প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার চিত্র তুলে ধরবেন।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিবসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেবেন। নতুন মহাসচিবের অধীনে এবারই প্রথম অধিবেশন হচ্ছে। এজন্য এবারের অধিবেশনটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে সদস্য রাষ্ট্রগুলো।
No comments:
Post a Comment